মৌলভীবাজার,প্রতিনিধি : দেশের প্রাকৃতিক অন্যতম বন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রতিবছর ১ হাজার ২শ থেকে দেড় হাজার সাপ গাড়ি চাপা ও ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায় বলে বন্যপ্রাণী গবেষকরা জানিয়েছেন। প্রতিবছর গাড়ি চাপায় ও ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাওয়া এ সাপের মধ্যে অধিকাংশই দেশে বিলুপ্ত প্রজাতির সাপ। গত শুক্রবার রাতে একটি সাপ গাড়ি চাপায় মারা গেলেও বন বিভাগ এ ব্যাপারে কিছুই জানে না। প্রতি বছর এভাবে গাড়ি চাপায় ও ট্রেনে কাটা পড়ে সাপগুলো মারা গেলে একসময় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে সরীসৃপ প্রজাতীর প্রাণীগুলো বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে বন্যপ্রাণী গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
সিলেট বন বিভাগের অন্যতম বন কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া বন বিটকে ১৯৯৬ সালে সরকারীভাবে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। এ অভায়রণ্যে রয়েছে ৩৪ প্রজাতির সাপ। এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দুর্বল সাপও রয়েছে। লাউয়াছড়ার বুক চিড়ে প্রবাহিত কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়ক ও সিলেট-আখাউড়া রেলপথ। প্রতিদিন কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়ক দিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে বিভিন্ন ধরনের শত শত যানবাহন আর রেলপথ দিয়ে চলাচল করছে আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেনগুলো। বনের এক পাশ থেকে অপর পাশে যাতাযাতের সময় প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রজাতির ছোট বড় ৩-৪ টি সাপ উদ্যানের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথে গাড়ি চাপা ও ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাচ্ছে। কোন কোন মাসে এ সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে বলেও গবেষক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গলের মাগুরছড়া এলাকায় একটি সাপ মরা পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে শুক্রবার রাতে কোন এক সময় সড়ক পাড়াপাড়ের সময় প্রায় পৌনে ৪ ফুট লম্বা এ সাপটি গাড়ি চাপায় মারা গেছে। এ সময় কানাই দাস নামে এক যুবক সাপটি নিয়ে যায়। সে নিজেকে সাপ গবেষক শাহরিয়ার সিজারের সহযোগী দাবী করে বলেন, গাড়ি চাপায় মারা যাওয়া সাপটির নাম হচ্ছে ফণিমনসা। অসতর্কতার কারণেই বিভিন্ন গাড়ীর নিচে চাপা পড়ে ও ট্রেনে কাটা পড়ে প্রতিদিনই এভাবেই বিভিন্ন প্রজাতীর ৩-৪টি সাপ মারা যাচ্ছে। তাদের এ হিসেবে মাসে গড়ে ৯০ থেকে ১২০টি এবং বছরে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১ হাজার ৮০ থেকে ১২শ সাপ মারা যাচ্ছে। তবে কখন এ সাপটি মারা গেছে তা জানে না স্থানীয় বন বিভাগ।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাহাবুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করলে গাড়ি চাপায় মারা যাওয়া সাপের ঘটনাটি তার জানা নেই বলে জানান। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে কি হয়েছিল। তিনি বলেন, গাড়ি চাপায় সাপ মারা রোধ করা খুবই কঠিন। ইতিমধ্যেই লাউয়াছড়ায় প্রবেশের উভয় পাশে গাড়ি ধীরে চলাচলের জন্য সতর্কবাণী হিসাবে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। তবে বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তার স্বার্থে এ সড়কটি পরিবর্তন করে ন্যাশনাল পার্কের বাইরে নিয়ে যাওয়া সর্বোত্তম বলে তিনি মনে করেন। বন বিভাগের সাথে যৌথভাবে সাপ গবেষণার কাজ করছে ক্যারিনাম সংস্থার নির্বাহী সম্পাদক ড. এস এম এ রশীদ।http://www.amadershomoy2.com/content/2012/02/10/news0651.htm
No comments:
Post a Comment