30 Sep 2011 03:30:21 PM Friday BdST | | |
আড়াই হাজার বছরের বেদে সভ্যতা এবার কলকাতার পূজার থিম! সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
|
বেদিনি রূপি মা দুর্গা কলকাতার পূজামণ্ডপে ছবি/বাংলানিউজ |
কলকাতা: ওরা এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে। কালু মাল, আলি মুহম্মদ বেদে, ডোমনা বেদে, অমিত চিত্রকর।
কেউ সাপ খেলা দেখান, কেউ বাজিকর, কেউ আবার চিত্রকর। পেশার ভিন্নতা থাকলেও এরা সবাই বেদে জনগোষ্ঠির মানুষ।
কলকাতা মহানগরীর দুর্গা পূজায় এবার ওদের মতো প্রান্তিক জনগোষ্ঠিকে থিম হিসেবে হাজির করেছে উত্তর কলকাতার দমদম মলপল্লী সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি।
উপমহাদেশের বিশিষ্ট বেদিয়া গবেষক ড. রক্তিম দাশের বই ‘নৃতত্ত্বের আলোকে বেদিয়া জনজাতি’ থেকেই এবার এই থিমের পরিকল্পনা জানালেন শিল্পী সোমনাথ মুখার্জি।
সোমনাথ মুখার্জি বলেন, আমি বইটি পড়ে মনে করেছিলাম এই জনগোষ্ঠির যন্ত্রণাকে মানুষের সামনে হাজির করতে হবে।
এদের ভাষা ও সংস্কৃতি যা আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন তা আজ হারিয়ে যাচ্ছে। বাংলা তথা এই উপমহাদেশের লোক সংস্কৃতি চিরকালই থেকে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে।
এবারের কলকাতা পূজোয় এই অভিনব পরিকল্পনা নিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এরফলে পূজোর কটাদিন এই মন্ডপে দর্শনার্থীর ঢল নামবে বলে বাড়তি পুলিশ চাওয়া হয়েছে প্রশাসনের কাছে- এমনটাই জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
সাপের বাসার আকৃতি এই মণ্ডপটির ওপরে রয়েছে একটি বিশাল ঢুগডুগি। বেদেদের ঘর বাড়ির আদলে মণ্ডপটি গড়ে ওঠেছে পাটকাঠি দিয়ে।
মণ্ডপের দেওয়ালে রয়েছে পটচিত্রে সম্পূর্ণ মনসামঙ্গল কাব্যটি। মণ্ডপের ভেতরের ওপরের সিলিং থেকে ঝুলানো হয়েছে সাপ রাখা ঝুড়ি আর বিন।
দুর্গা প্রতিমা এখানে একটি বেদেনি মেয়ে। ত্রিশুলের বদলে সাপ ধরার খন্তা দিয়ে তিনি এখানে অসুর বধ করছেন। প্রতিমার পেছনে চালচিত্রে রয়েছে পঞ্চনাগ। আটপৌরে বেদিনী মেয়েদের মতো দেবীর পরণে ছাপার শাড়ি।
আর যাদের নিয়ে এত কথা তারা! তারাও আছেন। মণ্ডপের ভেতরে তৈরী করা হয়েছে তাবু। এই কটি দিন তারা তাদের সংস্কৃতি- সাপ খেলা, পটের গান, পুতুল খেলা আর মাদারির খেলা দেখাবেন।
মণ্ডপের বাইরে থাকছে এই জনগোষ্ঠির ইতিহাসের একটি প্রর্দশনী। এদের নিয়ে আন্দোলনরত ভারতের বেদিয়া ফেডারেশনের বিভিন্ন দাবি নিয়ে প্রচার কর্মসূচি।
বেদিয়া ফেডারেশনের সম্পাদক ড. রক্তিম দাশ এনিয়ে বলেন, আমাদের আন্দোলনের এটা একটা নতুন দিক। দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে যে ব্যাপক মানুষের সমাগম ঘটে তাদের সামনে এবার আমরা আমাদের কথা তুলে ধরতে পারব।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১১ | |
No comments:
Post a Comment